অর্ধেক জীবন pdf

 

অর্ধেক জীবন pdf,অর্ধেক জীবন রিভিউ,অর্ধেক জীবন কবিতা,সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রেমের উপন্যাস,বাংলা কবিতায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের অবদান,কৃত্তিবাস পত্রিকার ইতিহাস,প্রথম প্রণয়,সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কবিতা সমগ্র,

  • বইয়ের নামঃ অর্ধেক জীবন
  • লেখকঃ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
  • বইয়ের পৃষ্ঠাঃ 318
  • বইয়ের ধরনঃ পিডিএফ
  • বইয়ের সাইজঃ ৬.৫৩ এমবি

অর্ধেক জীবনসুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বিনামূল্যে ডাউনলোড করুন বা অনলাইনে পড়ুন। সুনীল গঙ্গোপাধ্যাইয়ের বিভাগ থেকে অর্ধেক জীবন বাংলা বই। অর্ধেক জীবন পোর্টেবল ডকুমেন্ট ফরম্যাট (পিডিএফ) ফাইলের আকার 318 এমবি। আপনি যদি অনলাইন অর্ধেক জীবন pdf download করতে চান তবে অনুগ্রহ করে ডাউনলোড বাটমে ক্লিক করুন এবং সাথে সাথে বই ডাউনলোড শুরু হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ ।

অর্ধেক জীবন রিভিউ

ধারাবাহিকভাবে এই রচনা “দেশ” পত্রিকায় প্রকাশের সময় ও সমাপ্ত হলে 'অনেকে আমাকে প্রশ্ন ও অভিযােগ করেছেন, আমি অর্ধেক জীবন' নাম দিয়েছি কেন, আমি কি আমার আয়ুর সীমানা জানি? কিংবা অকস্মাৎ এ রচনা শেষ হয়ে গেল কেন, দ্বিতীয় খণ্ড কি আবার লেখা হবে ? অতি সংক্ষেপে এর উত্তর এই যে, নামকরণের সঙ্গে আমার আয়ুর কোনও প্রশ্নই নেই, পুরাে জীবনের কথা কেউ কখনও লিখতে পেরেছেন কি না আমি জানি না, তা ছাড়া, শেক্সপিয়ারের হ্যামলেটের যে-উক্তিটি আমি উদ্ধৃত করেছি, তার মধ্যেই এই নামকরণের তাৎপর্য নিহিত আছে। এর পরের খণ্ড আর লেখার প্রশ্নই ওঠে না। কারণ এ রচনা আমি মধ্যপথে সমাপ্ত করিনি, এইটুকুই-এর পূর্বপরিকল্পিত নির্দিষ্ট পরিধি। পূর্ব বাংলার এক অখ্যাত গ্রামে জন্ম। বহু বছর পর স্বাধীন বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন, এর মধ্যে একটা বৃত্ত আছে। এবং চল্লিশ-পঞ্চাশ ও ষাটের দশকের বিপদসঙ্কুল, কঠিন, ঝাবিক্ষুব্ধ সময়ের মধ্য দিয়ে জীবন টিকিয়ে রাখা, যাকে বলে জীবনসংগ্রাম, সব কিছুই অনিশ্চিত, তারই মধ্যে নানা রকম আশা, আকাঙক্ষা ও ভালােবাসা, অনেক স্বপ্ন, সেই বয়েসটার কথা লিখতে চেয়েছি। এটাকে ঠিক আত্মজীবনীও বলা যায় না। নিজের অন্তৰ্জীবনের কথা বলা যায় না কিছুতেই, অনেক সময় মনে হয় তা অকিঞ্চিৎকর, অন্যকে জানাবার মতন নয়, আমার পারিবারিক কাহিনীও যথাসম্ভব সংক্ষিপ্ত, বরং সমসাময়িক স্মৃতিকথাই প্রাধান্য পেয়েছে, কাছাকাছি ইতিহাসের পটভূমিকা এবং উল্লেখযােগ্য ঘটনাবলী। 


এর পরবর্তী অংশ না লেখার প্রধান কারণটিও এখানে ব্যক্ত করা যায়। এই অংশে আমি এমন অনেক মানুষের কথা লিখেছি, আমার সেইসব প্রিয় মানুষ 'আর ইহলােকে নেই, বন্ধুদের মধ্যেও কেউ কেউ চিরবিদায় নিয়েছে, তাঁদের মৃত্যুর কথা লিখতে আমার কলম অক্ষম। আমার এই স্মৃতিকাহিনীতে তাঁরা জীবন্ত হয়েই থাক। শুধুমাত্র আমার বাবার মৃত্যুর কথা লিখতেই হয়েছে প্রসঙ্গক্রমে। 

এই লেখা শুরু করার পর পদে পদে বাধার সম্মুখীন হয়েছি, আর সেই বাধা এসেছে আমার নিজেরই কলম থেকে। কোনও লেখকের পক্ষে এক বিষয় নিয়ে বারবার লেখা সম্ভব নয়, তা চর্বিত চর্বণের পর্যায়ে পড়ে। আমি আমার বিস্তর কবিতায় ও গল্প-উপন্যাসে নিজের জীবনকে ব্যবহার করেছি টুকরাে টুকরােভাবে। সেইসব ঘটনারই পুনরাবৃত্তি করতে আমার কলম ইতস্তত ও দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে থমকে গেছে। অথচ ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য সে সব একেবারে বাদ দেওয়াও যায় না। সেই জন্যই ওই সব অংশ (যেমন আমার প্রথমবারের প্রবাস জীবন ও মার্গারিটের সঙ্গে বন্ধুত্ব) আগেই অন্যত্র বিস্তৃতভাবে লেখা হয়েছে বলে এখানে শুধু একটু একটু ‘য়ে গেছি মাত্র। কৃত্তিবাস' পত্রিকার ইতিহাসও আমি নিজে ছাড়াও আরও অনেকে লিখেছেন, তাই এখানে শুধু কয়েকটি রেখার টানই মনে হয়েছে যথেষ্ট। তবু, 'আমি স্বীকার করতে বাধ্য, কোথাও কোথাও পুনরুক্তি এসেই গেছে।


আর একটি বিষয়ও উল্লেখযােগ্য। এ বছর সাহিত্যে নােবেল পুরস্কার পেয়েছেন ভি এস নইপাল, তাঁর সম্প্রতি প্রকাশিত গ্রন্থটির নাম 'হাফ অফ লাইফ'। 'আমার ‘অর্ধেক জীবন ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হতে শুরু হয় প্রায় তিন বছর আগে, তখন নইপালের উপন্যাসটির

নাম কিংবা প্রস্তুতিপর্বের কথা কিছুই জানা যায়নি। হাফ অফ লাইফ অবশ্য স্মৃতিকথা নয়, জীবন-ঘেঁষা উপন্যাস, তবু এই নামের মিলে আমি কিছুটা অপ্রস্তুত বােধ করেছি। আমি ওই বইয়ের কথা আগে শুনিনি, নইপালও যতদূর মনে হয় বাংলা জানেন না এবং দেশ পত্রিকা পড়েন না। তিনিও কি হ্যামলেটের ওই লাইনটির কথা মনে রেখেছেন? তাঁর বইটিতে অবশ্য সে উল্লেখ নেই। যাই হােক, সে জন্য আমার এ রচনার নাম বদলের কোনও যৌক্তিকতা নেই। | ধারাবাহিকভাবে প্রকাশের সময় প্রথমে যে-পরিচ্ছেদটি ছিল, সেটি এ গ্রন্থ থেকে বাদ দিয়েছি ইচ্ছে করে। সে পরিচ্ছেদে ছিল আমার জীবনের পরিণত বয়সের কিছু কিছু ঘটনার সমন্বয়, তার পরের এই দীর্ঘ অংশ ফ্ল্যাশ ব্যাক, আঙ্কিক হিসেবে বেমানান। তা ছাড়া তাতে যে কৌতুকের প্রয়াস ছিল, তার রেশ এতদূর ধরে রাখা যায় না। সেই পরিচ্ছেদটি পরিশিষ্ট হিসেবে যুক্ত করার কথা একবার ভেবেও শেষ পর্যন্ত পরিত্যক্ত হয়েছে, পুরনাে ‘দেশ’ পত্রিকার পৃষ্ঠাতেই সেটা। নিবদ্ধ থাক। | ইতিহাসের উপাদান ও প্রেক্ষাপটের ঘটনাবলী কিছু কিছু বই ও সমসাময়িক পত্র-পত্রিকা থেকে সংগৃহীত হয়েছে, সেগুলির নাম আর আলাদাভাবে উল্লেখিত হল না। আমার নিজের যে-সব বইতে আমার জীবন ছড়িয়ে আছে, সেগুলির তালিকা দিলেও নিশ্চিত বাহুল্য বােধ হবে।

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ