আদর্শবান স্ত্রীর ১০টি গুন । যে নারীর ভেতর এই ১০টি গুন থাকবে সে জান্নাতে যাবে ইনশাআল্লাহ

আসসাল্লামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, একজন আদর্শবান স্ত্রীর দশটি গুন রয়েছে ।একজন পুরুষ চায় সে যেন একজন আদর্শবান স্ত্রীকে পায়, আবার একজন নারীও চায় সে যেন একজন আদর্শবান স্বামী পায় । তাই আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন, বিশ্বনবী (সাঃ) বলেছেন গোটা পৃথিবীর মধ্যে যত নেয়ামত আছে তাঁর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ নেয়ামত হচ্ছে একজন নেককার স্ত্রী । যে ঘরে একজন নেককার স্ত্রী রয়েছে, রাসুল (সাঃ) বলেন। সে ঘরটি একটা জান্নাতের বাগান হয়ে যায় । আর যে ঘরে একজন বদকার স্ত্রী রয়েছে, সে ঘরটি গোটা একটি জাহান্নামের গর্ত হয়ে যায় । একটা স্ত্রী পারেন তাঁর ঘরটি সুন্দর করে সাজাতে, আবার একজন স্ত্রীই পারেন একটি সুন্দর সংসারকে ধ্বংস করে দিতে । এ জন্য প্রতেক্টি স্বামী চান তিনি যেন একজন নেককার স্ত্রী পান । প্রিয় ভিউয়ার আজকে বলবো একজন আদর্শ স্ত্রীর দশটি গুন সম্পর্কে । সে গুলো হলঃ-



১। পাঁচ ওয়াক্ত সালাতাদায় করা । একজন আদর্শবান স্ত্রীর এক নাম্বার আদর্শ হচ্ছে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত খুশুখুজুর সাথে আদায় করবে । এবং সে যেকোনো পরিস্থিতিতেই থেকুক না কেন, যতি কষ্ট হোক না কেন, তিনি এই নামাজ কোনও ভাবেই ছাড়বে না ।

২। স্বামীর কথা শোনা এবং অনুগত্য করা । যে স্ত্রী স্বামীর কথা শুনবে, স্বামীকে ভালবাসবে, কিন্তু স্বামী যদি অন্যায় করতে বলে সেটা না করে তাকে বুঝাবে এবং স্বামীর ভালো উপদেশগুলো অবশ্যি পালন করবে। বিশ্বনবী (সাঃ) তাদেরকে শ্রেষ্ট রমনী বলেছেন। আর যদি কোনও স্ত্রী তাঁর স্বামীকে অমান্য করে তাঁর উপরে বিশ্বনবী (সাঃ) লানত দিয়েছেন । আল্লাহর রাসুল বলেন, যখন আমি জাহান্নাম দেখতে গেলাম, তখন সেখানে আমি জাহান্নামীদের মধ্যে অধিকাংশ নারীদের দেখতে পেলাম । তার একটি কারণ তারা স্বামীর আনুগত্য করে না । প্রিয় ভিউয়ার আমাদের দেশে এমন অনেক স্ত্রী আছেন, যারা স্বামীকে অভিশাপ দিয়ে থাকেন ।

৩। আদর্শবান স্ত্রীর তিন নাম্বার গুন হল, সব সময় স্বামীকে খুশি করার চেষ্ঠা করা । তারা আচার ব্যবহার, কথাবার্তার এবং খেদমতের মাধ্যমে তাদের স্বামীকে খুশি করার চেষ্টা করা । স্বামীর মন খারাপ, তখন একজন আদর্শবান স্ত্রী চেষ্টা করা, কিভাবে স্বামীর মন ভালো করা যায় ।আবার কিছু স্ত্রী এমন আছে, স্বামীর মন খারাপ কিন্তু সে কোন ভাবে তাঁর স্বামীর মোঃ ভালো করার চেষ্টা করে না । উল্টো সেও আরেক কোণায় গিয়ে নিজের মতো করে বসে থাকে । এমনকি তাঁর কোন খোজ খবর নেয় না । সে কখনো একজন আদর্শবান স্ত্রী হতে পারে না । আদর্শবান স্ত্রী কেবল মাত্র তারাই, যারা স্বামীর সুখ টাও বুঝবে এবং দুঃখ টাও বুঝবে । তাই সুখের সময় যেমন স্বামীর অয়াশে থাকবে,তেমনি দুঃখের সময় সর্বদা তাঁর পাশে থাকবে । 

৪। ঝগড়া এবং রাগারাগি করা থেকে বিরত থাকা । একজন আদর্শবান্সত্রী কখনোই রতার স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া বা রাগারাগি করতে পারে না । যখন্তাদের স্বামী রাগ থাওবে, তখন তাঁরা চুপ থাকবে । এবং যখন পরিস্থিতি ঠান্ডা হয়ে যাবে তাঁরপর স্বামীর ভুল থাকলে তা বুঝিয়ে বলবে । এবং স্বামীর রাগ ভাঙানর চেষ্টা করবে । এছাড়াও তখন তারা ধৈর্য ধারন করবে, এবং আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতয়ানির রাজীম পড়বে । কারন এই ঝগড়া বিবাদের মূল কারণ হচ্ছে শয়তানের অসওয়াসা । শয়তান সবচেয়ে বেশি সাফল্যমন্ডিত হয় যখন সে কোনও দম্পতির মাঝে ঢুকে তাদের মধ্যে ভেজাল বা ঝগড়া বাদিয়ে দিতে পারে । শয়তান সবসময় চেষ্টা করে মানুষের মধ্যে ঝগড়া বিবাদের সৃষ্টি করতে । কিন্তু সে সময় অবশ্যি আদর্শবান স্ত্রী চুপ থাকবে । সে তাঁর স্বামীর উপরে কোন কথা বলবে না । কারন সে বুঝবে যে, এখন স্বামী রাগ হয়ে গেছে, এ সময় যদি সেও রাগ হয়, এর ফলে ঝগড়া বিবাদ বাড়তে থাকবে । এই হল আদর্শবান স্ত্রীর চার নাম্বার গুন ।

৫। স্বামীকে ভালো কাজের জন্য ধন্যবাদ জানানো । একজন আদর্শবান স্ত্রী ভালো কাজের জন্য ধন্যবাদ জানাবে । একজন আদর্শবান স্ত্রীরর কাজ হচ্ছে, স্বামী যখন কোন ভাল কাজ করবেন তখন অবশ্যই তাকে সাধুবাদ এবং ধন্যবাদ জানানো । কন্তু অনেকেই আছে যারা স্বামীকে বৎসনা দেয়,অপমান করে এবং বিভিন্ন রকমের কটু কথাবার্তা বলে । কিন্তু একজন আদর্শবান স্ত্রী অবশ্যই ভালো কাজের জন্য তাঁর স্বামীকে ধন্যবাদ জানাবে এবং তাকে উৎসাহ দিবে,উদ্দীপনা দিবে । প্রত্যেক্টি সফল পুরুষের পেছনে একজন মহিয়সী আদর্শবান নারীর ভুমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ । কেননা তারা তাদের কর্মকান্ডের মাধ্যমে স্বামীকে উৎসাহ দিয়ে থাকে । 

৬। স্বামীর সাথে আড্ডা দেওয়া,গল্প করা,আনন্দ ফুর্তি করা । বিশ্বনবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মাঝেমধ্যে আম্মাজান আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) এর কোলে মাথা পেতে ঘুমিয়ে থাকতেন । এবং গল্প করতেন । আবার আম্মাজান আয়েশা (রাঃ) নবীজির কলের মধ্যে শুয়ে থাকতেন এবং গল্প করতেন ।  তাই অবশ্যই স্বামীকে দিবেন, স্বামীর সাথে আড্ডা দিতেন, মাঝে মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাবেন । কিন্তু অনেক স্বামী আছেন যারা কখনো তাঁর স্ত্রীকে বাহির ঘুরতে নিয়ে যান না । এটা কখনোই করা উচিৎ নয়, স্বামী স্ত্রীর দাম্পত্য জীবন হচ্ছে অত্যন্ত সুখের জীবন । যেভাবে সুখ শান্তি হয় সেটাই করতে হবে ।

৭। নিজে সর্বসা হাসিখুশি থাকতে হবে, এবং সেজেগুজে থাকতে হবে । কখনোই স্বামীর সামনে মন খারাপ করে থাকা যাবে না, নোংরা হয়ে থাকা যাবে না । কারণ আপনি যদি মন খারাপ করে থাকেন এবং নোংরা হয়ে থাকেন,এতে করে আপনার স্বামীরও কিন্তু মন খারাপ হইয়ে যাবে ।

৮। অবশ্যই সব সময় পর্দার মধ্যে থাকতে হবে । কেননা পর্দা ছাড়া একজন নারীর কোন উপায় নেই । একজন মেয়ে যত বেশি পর্দা করবে,তার উপর আল্লাহ তায়ালার রহমত এবং বরকত ততবেশি নাজিল হবে । এবং যে নারী পর্দা আবদ্ধ থাকে, সে সর্বদা শয়তানের ফেতনা থেকে বেচে থাকতে পারে । তাছাড়াও পর পুরুষের খারাপ কুদৃষ্টি থেকেও সে বেচে থাকবে, ইনশাআল্লাহ ।

৯ । স্বামী কাজ থেকে বাড়িতে ফিরলে তাঁর খেদমত করবে । একজন আদর্শবান স্ত্রী অবশ্যই স্বামীকে দেখলেই তাঁর মনের অবস্থা বলতে পারবে । সে বুঝতে পারবে তাঁর স্বামী এখন কি চায় । তাকে শরবত বানিয়ে দেওয়া, অসুস্থ থাকলে তাঁর সেবা শশ্রুষা করা, তাঁর যাবতীয় কাজগুলো করে দেওয়া, এবং যদি গোসল করতে চায়, অসুস্থ অবস্থায় তাঁর গোসলের প্রয়জনীয় সামগ্রীগুলো এগিয়ে দেওয়া ।সজা কথা খেদমত করাই হচ্ছে একজন আদর্শবান স্ত্রীর নয় নাম্বার কাজ ।

১০। স্বামীর হৃদয় জয় করবার জন্য সর্বদা চেষ্টা করা । এই হল আদর্শবান স্ত্রীর দশটি গুন ।  

এই গুলো যে স্ত্রী মধ্যে পাওয়া যাবে তিনি হচ্ছেন একজন আদর্শবান স্ত্রী । তাঁর ওপর সর্বদা আল্লাহ পাকের রহমত এবং দোয়া বর্ষিত হতে থাকে । সে যে কোন কাজে যাবে সব কাজে সফল হবে । এবং সে পরিবারটি হবে একটি জান্নাতের বাগিচা । সে সংসারে আল্লাহ তাআলার রহমত দিবেন এবং শান্তি দিবেন । এবং ঐ সংসারটিকে আল্লাহ তাআলার বালা-মুসিবত থেকে হেফাজত রাখবেন । স্বামী স্ত্রীর মধ্যে আল্লাহতালা মহব্বত পয়দা করে দিবেন যে, শয়তান ও তাদের ক্ষতি করতে পারবে না । ইনশাআল্লাহ । 

এই জন্য একজন আদর্শবান স্ত্রী দশটি গুন যদি কোন মেয়ে অর্জন করতে পারে ইনশাআল্লাহ এই মেয়েকে তাঁর স্বামী কলিজা দিয়া ভালবাসবে । ওই স্ত্রীর সংসার অবশ্যই টিকে থাকবে । আল্লাহ তায়ালার শান্তিতে পরিপূর্ণ করে দিবেন । এবং তাঁর পেট থেকে যে সন্তান জন্ম নিবে তাকে আল্লাহ তাআলা নেক সন্তান হিসেবে কবুল করবেন । সে কখনো কষ্ট পাবে না সে দুনিয়াতে হবে অনেক দামি একজন মহিলা এবং পরকালে হযরত আছিয়া, হযরত ফাতেমা (রাঃ) এবং মা খাদিজা (রাঃ)র মতো জান্নাতে যাবে । 

আল্লাহ পাক বাব্বুল আলামিন আমাদের মেয়ে সন্তান্দেরকে এমন আদর্শবান মেয়ে সন্তান হওয়ার তৌফিক দান করুন । আমিন! 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ