ইসলামের দৃষ্টিতে সৃষ্টি তত্ত্ব - পিডিএফ বই ডাউনলোড
সত্যিকারের সৃষ্টিতত্ত্বকে বর্জন করা হয়েছে। গ্রহন করা হয়েছে যাদুশাস্ত্রকেন্দ্রিক দর্শন উৎসারিত মিথ্যা সৃষ্টিতত্ত্ব। মুসলিম আলিমগন এসব গ্রহন করে নিয়েছেন। সেই সাথে ইসলামাইজ করা হয়েছে। এই বিকৃতির শুরু যেদিন থেকে গ্রীক দর্শন আরবে প্রবেশ করে, সেদিন থেকে। ওই যুগের আলিমগনও সেসব দ্বারা ধীরে ধীরে প্রভাবিত হতে শুরু করেন। একপর্যায়ে এখন আর অধিকাংশ মুসলিম সৃষ্টিতত্ত্বসংক্রান্ত বিষয়ে সাহাবীদের (রাঃ) আকিদা রাখে না। বরং এমন কিছুতে বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং ইসলামের সাথে মিশ্রন ঘটিয়েছে যার উৎস শয়তান এবং যাদুবিদ্যার কুফরি শাস্ত্র। তারা 'প্রাকৃতিক দর্শন'কে গ্রহন করে কুরআন সুন্নাহর অপব্যাখ্যা করে, সেসবকে দ্বীনের মধ্যে অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে। তারা কুফর ও শিরকে ভরা বানোয়াট আকিদা গুলোর প্রচার করার সময় গ্রহনযোগ্য করবার জন্য কুরআনের পবিত্র আয়াতগুলোকে ব্যবহার করছে এই বলে যে "কুরআনে ১৪০০ বছর আগে অমুক অমুক বিষয় গুলো বলেছে", যা অপবিজ্ঞানী, দার্শনিকরা বলছে! নাউজুবিল্লাহ!! এভাবে সুস্পষ্ট বৈপরীত্যপূর্ন কুফরকে কুরআন এর দলিল দ্বারা সত্যায়ন এবং বিপরীত দিক দিয়ে, কুরআনের বর্ননার সাথে ওই সব শয়তানি আকিদার মেলবন্ধনের অপচেষ্টা চলছে।
অথচ বর্তমান অপবিজ্ঞানী, প্রাচীন যাদুকররা যা বলে তা তাদের অনুমান এবং শয়তানের বক্তব্য ছাড়া কিছুই নয়। ওদের কথা বাস্তব জগতের সাথেও কোনরূপ সাদৃশ্যতা রাখে না। বাস্তব জগতে বরং সেটাকেই সত্যরূপে দেখা যায়, যা রহমান আল্লাহ সুবহানাল্লাহু ওয়া তায়ালা কুরআনে এবং সাহাবিদের (রাঃ) বর্ননাগুলোয় পাওয়া যায়। কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যায়, অপবিদ্যার ধারক এবং শয়তানের আউলিয়ারা ১% সত্যের সাথে অনুমান নির্ভর ৯৯% কুফরি দর্শন মিশ্রিত করে প্রচার করে, মূর্খরা এতেই ফাঁদে পড়ে। তারা শয়তানের এবং তার অনুসারীদের অনুসরন করতে শুরু করে।
আজকের সময়ে হাজারো ফিতনার মধ্যে সৃষ্টিতত্ত্ব সংক্রান্ত আকিদাগত ভ্রষ্টতার ফিতনায় উম্মাহ নিমজ্জিত। এজন্য সত্য মিথ্যাকে স্পষ্ট করতে এবং সতর্ক করতে, এ সংক্রান্ত বিষয়ে কুরআন সুন্নাহর দলিলভিত্তিক ধারাবাহিক আর্টিকেল প্রকাশ করবার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছি। আমি এখানে নিজস্ব কোন নবউদ্ভাবিত আকিদা বা চিন্তাধারাকে উপস্থাপন করছি না, বরং এটা কুরআন সুন্নাহর দালিলিক সুবিশাল সংকলন বৈ আর কিছু নয়। এটা ১৪০০ বছর আগের সাহাবীদের সৃষ্টিতত্ত্ব সংক্রান্ত বিষয়ে আকিদা,জ্ঞানকেই পুনরুজ্জীবন করার প্রয়াস মাত্র। এ লক্ষ্যে cosmogony এর ব্যপারে আসা কুরআন অজস্র সহীহ ও দুর্বল হাদিস এবং প্রাচীন সুপ্রসিদ্ধ আলিমদের মতামত দৃষ্টিভঙ্গি এবং তাফসীর নিয়ে আসা হবে ইনশাআল্লাহ। আমাদের কাছে কাফির মুশরিকদের মনগড়া এবং যাদুশাস্ত্র নির্ভর কুফরি বিশ্বাসের চেয়ে প্রাচীন বরেন্য আলিম ও সাহাবীদের (রাঃ) দ্বারা গৃহীত' কুরআন সুন্নাহর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ইসরাইলীয় বর্ননাও শত সহস্রগুন উত্তম।
বর্ণনা করবো। তবে ইমাম বুখারী (র) তাঁর সহীহ বুখারীতে আমর ইব্ন আস (রা) সূত্রে এ মর্মে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন ৪
بلغوا عني ولوآية وحدثوا عن بني إسرائيل ولاحرج وحدثوا عنى ولا
تكذبوا على ومن كذب على متعمدا فليبوأ مقعده من النار.
অর্থাৎ- “আমার পক্ষ থেকে একটি বাক্য হলেও তোমরা তা আমার পক্ষ থেকে পৌছিয়ে দাও, বনী ইসরাঈল সূত্র থেকেও বর্ণনা করতে পার তাতে কোন অসুবিধা নেই এবং আমার পক্ষ থেকে বর্ণনা কর, তবে আমার নামে মিথ্যা রটনা করো না। ইচ্ছাকৃতভাবে যে ব্যক্তি আমার নামে মিথ্যা রটনা করবে, সে যেন জাহান্নামে তার ঠিকানা বানিয়ে নেয়। তা আমাদের মতে ঐ
কুরআন সুন্নাহ ভিত্তিক সত্যিকারের সৃষ্টিতত্ত্বের পাশাপাশি মাঝেমধ্যে বর্তমান সময়ে বিচিত্র অপব্যাখ্যার চিত্রও তুলে ধরব, ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার কাছে এ ব্যপারে সাহায্য চাই এবং ভুলত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করি।
আশাকরি এসমস্ত বিষয়ে চলমান বিতর্ক মতানৈক্য অবসান ঘটবে। কিন্তু তাদের ব্যপারে আশাহীন যারা কুরআন সুন্নাহর দলিলকে যথেষ্ট মনে করে না। যাদের হৃদয়ে ব্যধির দরুন সজ্ঞানে কাফিরদের কুফরি আকিদাকে গ্রহন করে এবং সুস্পষ্ট
সাংঘর্ষিকতা দেখা স্বত্ত্বেও সেগুলোকে দ্বীনের সাথে মেশাতে চায়। আল্লাহর কাছে মু'তাযিলা, মুরজিয়া এবং তাদের ন্যায় অন্যান্য পথভ্রষ্ট ফের্কার ফিতনা থেকে পানাহ চাই।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ