স্বপ্নদোষ হলে কি গোসল ফরজ

গোসল ফরজ হওয়ার কারণ কয়টি ও কি কি


গোসল চারি প্রকার যথা:– 

    1.ফরয, 

    2.ওয়াজিব, 

    3.সুন্নত,

    4.মোস্তাহাব

স্ত্রীর সহিত মিলনের পর, স্বপ্ন দোষ হইলে অথবা ঘুম হইতে উঠিয়া স্বপ্ন দোষের কথা মনে না থাকিলেও কাপড় বা বিছানায় মণির দাগ দেখা গেলে অথবা কামভাবে মণি বাহির হইলে গোসল ফরয হয়।

স্ত্রীলোকেরও উল্লেখিত অবস্থায় গোসল ফরয হয়। এতদ্ব্যতীত হায়েজ (১) স্বাভাবিক অবস্থায় কামভাব ব্যতীত এবং (২) প্রস্রাবের সময় কামভাব নেফাছের রক্ত বন্ধ হইলেও গোসল ফরয হয়।


ব্যতীত মণি বাহির হইলে পুরুষ ও স্ত্রীলোকের জন্য গোসল ফরয হয় না। কিন্তু উক্ত দুই অবস্থায় কামভাব বর্তমান থাকিলে গোসল ফরয হইবে। ফরয গোসল ভালমতে আদায় না করিলে মহাপাপী হইবে এবং কোন ইবাদতই কবুল হইবে না। তাই গোসলের তিনটি ফরয অতি সাবধানের সহিত পালন করিতে হয়।

গোসলের ফরয তিনটি,যথা:- 

(১) মুখ ভর্তি পানি লইয়া গড়গড়ার সহিত কুলি করা, কিন্তু রোযাদার গড়গড়া করিবে না।

(২) নাকের ভিতর পানি দ্বারা পরিষ্কার করা 

(৩) সমস্ত শরীর পানি দ্বারা ভালমতে মর্দন করিয়া ধৌত করা যাহাতে মাথা হইতে পা পর্য্যন্ত                প্রত্যেক পশমের গোড়ায় পানি পৌঁছে।

ফরয গোসলের নিয়ম:

যে কাপড় পরিধান করিয়া স্ত্রীর সহিত মিলন করে অথবা যে কাপড় পরিধান অবস্থায় স্বপ্ন দোষ হয়, সেই কাপড় ছাড়িয়া অন্য কাপড় পড়িয়া গোসল করা উত্তম। যদি কাপড়ের অভাব হয় তাহা হইলে পরিহিত অবস্থায় যে কাপড়ে নাপাক লাগিয়াছে তাহা ভালমতে খুঁজিয়া বাহির করিয়া গোসলের পূর্বে ভালমতে ধৌত করিতে হইবে। গোসলের প্রথমে দুই হাত কব্জা পৰ্য্যন্ত ধুইবে, তারপর শরীরের কোন অংশে নাপাকী লাগিলে তাহা ধৌত করিবে। অতঃপর গুপ্তস্থান ভালমতে ধৌত করিবে। তারপর  (বিছ্‌মিল্লাহির রাহমানির রাহীম) পড়িয়া পরবর্তী নিয়ত করিবে – (নাওয়াইতুল গোছলা লি-রাফইল্ জানাবাতে।)

অর্থঃ— আমি ‘জানাবাত' (সহবাস ও শুক্র নির্গমন সম্পর্কীয় অপবিত্রতা) দূরীকরণার্থে গোসলের নিয়ত করিলাম।

তারপর অযুর নিয়ত না করিয়া ও অন্যান্য দোয়া না পড়িয়া অযু করিবে কিন্তু

পা ধৌত করিবে না। পরে সমস্ত শরীর একবার পানি দ্বারা ভাল মতে ধৌত

করিয়া দ্বিতীয়বার পানি দ্বারা গোসল করিবার সময় বারবার পড়িবে এবং কলেমায়ে তমজীদ পাঠ করিবে।

কলেমায়ে তমজীদ

লা-ইলাহা ইল্লা আন্তা নূরাইয়্যাহ্দিয়াল্লাহু লি-নূরিহী মাইয়্যাশাউ মুহাম্মাদুর্ রাছুলুল্লাহে ইমামূল্ মূরছালীনা খাতেমূন্ নাবিয়্যীন।

অর্থ:–(হে আল্লাহ্!) তুমি ব্যতীত অন্য কোন মা'বুদ (এবাদতের যোগ্য) নাই। তুমি নূর, আল্লাহ্ তা'আলা যাহাকে চাহেন তাহার নূরের দিকে হেদায়েত দান করেন। হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াছাল্লাম আল্লাহ্ তা'আলার রাছুল, রাছুলগণের ইমাম এবং নবীগণের সর্বশেষ।

এইভাবে তৃতীয়বারও “বিছমিল্লাহির রাহমানির রাহিম” এবং “কলেমায়ে তমজীদ” পড়িয়া সম্পূর্ণ শরীর ভালমতে ধৌত করিয়া গোসল শেষ করিবে। অতঃপর অন্যত্র পানি দ্বারা তিনবার পা ধৌত করিবে এবং শুকনা কাপড় পরিয়া নামাজ অথবা ইবাদত-বন্দেগীর জন্য পুনরায় অযু করিতে হইবে।

মুরদারকে গোসল দেওয়া ওয়াজিব। শুক্রবার দিন, দুই ঈদের দিন, আরফার দিন ও কাফের মুসলমান হইতে চাহিলে গোসল করা সুন্নত। শবেবরাত ও শবে ক্বদরের রাত্রিতে মাগরিবের নামাজের পর ইবাদতের উদ্দেশ্যে গোসল করা মোস্তাহাব।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ